ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

উপকূল থেকে উপকূল

সকালের পত্রিকা রাতে, ভরসা অনলাইন

সোলায়মান হাজারী ডালিম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪১ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৬
সকালের পত্রিকা রাতে, ভরসা অনলাইন

হাতিয়া দ্বীপ থেকে: নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়া। মূল ভূখণ্ড থেকে এখানে আসতে বেশ বেগ পেতে হয় মানুষকে।

যেন অন্য একদেশ। সকালের পত্রিকা এখানে এসে পৌঁছায় গভীর রাতে, আর পাঠক তা পান পরদিন সকালে।

সারা দেশের খোঁজ-খবর নিতে এখানকার মানুষের ভরসা তাই অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলো। বাসি পত্রিকার জন্য তারা আর অপেক্ষা করেন না। যখন খবর তখনই পড়ে ফেলেন অনলাইনে।

হাতিয়া উপজেলা শহরের নিউ মার্কেটে কথা হয় কম্পিউটার সরঞ্জামাদির ব্যবসায়ী পারভেজের সঙ্গে। তিনি জানান, আমাদের এখানে আজকের পত্রিকা আসবে আগামীকাল সকালে। তাই আমরা পত্রিকার জন্য অপেক্ষা করি না, ঝটপট অনলাইন খুলে দেখে নিই, বর্তমানের সব খবর।
 
এ ক্ষেত্রে বাংলানিউজটোয়েন্টিফোরের কোন বিকল্প নেই বলেও উল্লেখ করেন পারভেজ।

সামনে থাকা কম্পিউটারে খোলা বাংলানিউজের সাইট দেখিয়ে পারভেজ বলেন, আমার কম্পিউটার যতক্ষণ খোলা থাকে ততক্ষণ বাংলানিউজও খোলা থাকে।

উপজেলার ভাঙন কবলিত নলচিরা এলাকায় গিয়ে কথা হয় কলেজ পড়ুয়া ছাত্র রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, অনলাইনই এখন আমাদের একমাত্র ভরসা। তবে ইন্টারনেটের গতি অনেক বড় সমস্যা।

অনলাইন ও বাংলানিউজের সাফল্যের গল্প শোনালেন স্থানীয় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মাহবুব মোর্শেদ লিটন। তিনি বলেন, অনলাইন নিউজপোর্টাল বাংলানিউজে আমার একটি  সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়। সেটি পড়ে ভয়েস অব আমেরিকা থেকে আমার কাছে ফোন এসেছিল। তারাও হাতিয়া ও এই এলাকার মানুষগুলোকে নিয়ে আমার কাছে বিস্তারিত জেনে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এ ঘটনাকে আমি বাংলানিউজের সাফল্য বলে মনে করি।
 
তিনি জানান, সবার আগে সর্বশেষ সংবাদ প্রকাশ করতে বাংলানিউজের বিকল্প নেই। এ পোর্টালটি পিছিয়ে পড়া জনপদের জন্য যেভাবে কাজ করছে তা প্রশংসনীয়।

মাহবুব মোর্শেদ আরও বলেন, দুই হাজার ১০০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের হাতিয়ায় লোকবসতি ছয় লাখেরও বেশি। আয়তনে বাংলাদেশের অনেক জেলার চেয়ে বড় এই দ্বীপ উপজেলার সঙ্গে দেশের মূল ভূখণ্ডের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম নৌপথ। কিন্তু পর্যাপ্ত নৌযানের ব্যবস্থা নেই। তার ওপর জেলা সদর থেকে হাতিয়া পৌঁছানোর নৌ-রুটটি পলিমাটিতে ভরাট হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এখানকার লোকজনকে তাই জোয়ার-ভাটার সঙ্গে তাল মিলিয়ে পারাপার হতে হয়, তাই পত্রিকা আসতেও দেরি হয়।

১৯৮২ সাল থেকে আজ পর্যন্ত হাতিয়ার সংবাদপত্রের একমাত্র এজেন্ট আবুল কাসেমকে উদ্ধৃত করে স্থানীয় সাংবাদিক ইসমাইল হোসেন কিরণ বলেন, হাতিয়ায় পত্রিকার সার্কুলেশন আগের থেকে কমে এসেছে। অনেক মানুষই অনলাইনে খবর পড়ে ফেলেন।

স্থানীয় সাংবাদিক শামীমুজ্জামান শামীম বলেন, এখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থা দুর্গম। তাই পত্রিকা আসতে গভীর রাতের বদলে মাঝেমধ্যে পরদিন সকালও হয়ে যায়। এক সময় টেলিভিশন ছিল না। ডাকযোগে দু’দিন পর পর পত্রিকা আসত। সেই পরিস্থিতি বদলে এখন যখনকার খবর তখনই অনলাইনে পড়া যায়।  

দ্বীপের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অনেকের হাতেই এখন স্মার্ট ফোন রয়েছে। এর মাধ্যমেই তারা ইন্টানেটে অনলাইন নিউজ পোর্টালের খবর পড়েন।

স্থানীয়রা জানান, অনলাইনগুলোতে আগে সব খবর পাওয়া যায়। বিশেষ করে  ঝড়, জলোচ্ছ্বাসসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের খবরও এখন অনলাইনেই জানতে পারি। সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ না থাকায় সবসময় টিভি দেখা যায় না।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০২৪ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৬
জেপি/এমজেএফ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।