ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

গাছের উপর গাছ বৃদ্ধি করে ‘ফুলঝুরি’ আর ‘মৌটুসি’

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৯
গাছের উপর গাছ বৃদ্ধি করে ‘ফুলঝুরি’ আর ‘মৌটুসি’ ‘ফুলঝুরি’ ও ‘মৌটুসি’। ছবি: সংগৃহীত

মৌলভীবাজার: সংরক্ষিত বনে গাছের উপর গাছ বৃদ্ধিতে দারুণ ভূমিকা রাখে ছোট্ট দুই পাখি। এরা কখনো অন্য পাখির মতো মাটিতে নামে না। গাছের উপরেই ঘুরে বেড়ায়। নিজেদের খাবার সংগ্রহ করে। প্রজনন সময় এলে ছানা জন্ম দেয়।

এই দুই বিশেষ পাখির নাম ‘ফুলঝুরি’ (Flowerpecker) ও ‘মৌটুসি’ (Sunbird)। এই দুই প্রজাতিই আকার-আকৃতিতে প্রায় সমান।

ছবির পাখি দু’টির একটির নাম- ‘কমলাপেট-ফুলঝুরি’ (Orange-bellied Flowerpecker); অপরটি ‘সিঁদুরে মৌটুসি’ (Crimson Sunbird)। এদের দৈর্ঘ্য যথাক্রমে ৯ সেন্টিমিটার এবং ১১ সেন্টিমিটার।
 
পাখি দু’টিকে আমাদের চারপাশে খুব একটা দেখা যায় না; দু’চারটি প্রজাতির ছাড়া। এ প্রজাতির পাখিরা আমাদের চারপাশের গাছগাছালিসহ বনজঙ্গলের গাছের উপর ঘুরে বেড়ায়। বিশেষ করে নির্জনবনের উঁচু গাছের উপর বিচরণের সময় বিভিন্ন বুনো ফল খেলে এদের বীজ গাছে ফেলে দেয়। সেই বীজ থেকেই ফের গাছ জন্মায়। তৈরি হয় গাছের উপরে গাছ। কেউ কেউ একে ‘আগাছা’ বলে থাকেন। এই গাছগুলোর মধ্যে নিহিত রয়েছে ফুলঝুরি আর মৌটুসিদের জীবনবৃত্তান্ত। অথবা ফুলঝুরি আর মৌটুসিদের মমতার পরশ রয়েছে সেই চিরসবুজ বনের গাছের উপরের গাছগুলোতে।
 
বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং পাখি গবেষক তারেক অণু বাংলানিউজকে বলেন, ফুলঝুরি আর মৌটুসিরা ছোট পাখি। অনেকেই এদের দেখতে পায় না। এর কারণ হলো এরা কম ঘনবসতি এলাকায় খুব বেশি আসে না। বাংলাদেশে প্রায় ৬ প্রজাতির ফুলঝুরি আর ৭ প্রজাতির মৌটুসি পাওয়া যায়।
 
তিনি আরো বলেন, লাউয়াছড়ায় এদের গাছের উপরে বেশি দেখা যায়। ওরা কখনো নিচে নামে না। গাছের উপরে এক প্রকারের গাছ বা আগাছা ওরা তৈরি করেছে। এ পাখিগুলো ওই গাছের উপরেই খায়; গাছের উপরেই ঘুমায়। শিশির থেকে পানি সংগ্রহ করে খেয়ে থাকে।
 
‘গাছের উপরে যে গাছ জন্মলাভ করেছে তা এই পাখিগুলোর জন্য। এটা অনেকটা বাগানের মতো। এই বাগানের ফুলের মধু খেয়ে তারা উপকৃত হয়; আবার এই ফুলগুলো তারাই ছড়ায়। ’
 
এটা দারুণ ব্যাপার যে- একটি ছোট পাখি তার প্রকৃতির প্রতিও দারুণ দায়বদ্ধতা পালন করছে। সে কেবল ফুলের মধু খেয়ে চলে যাচ্ছে না; প্রকৃতি সম্প্রসারণ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থা বিস্তারে দারুণ একটি ভূমিকা পালন করে চলেছে, বলেন বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং পাখি গবেষক তারেক অণু।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৯০৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৯
বিবিবি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।