ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

সংসার পাতছে বকেরা

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৬
সংসার পাতছে বকেরা ছবি : ইনাম আল হক

মৌলভীবাজার: পানি বা মাছের উপর নির্ভর করে বেঁচে থাকা পাখিদের বাসা তৈরি সময় এখন। হাওর, বিল, নদী বা জলাশয় সংলগ্ন এলাকার বসতবাড়িগুলোর বড় বড় গাছ এখন তাদের দখলে।

নতুন সংসার পেতে সন্তান জন্ম দিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে তারা।

বলছি বিভিন্ন প্রজাতির বকের কথা। এখন সংসার বাঁধার সময় তাদের। তাই এখন ঘুরছে যুগলবন্দী হয়ে।

বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ও পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক বাংলানিউজকে বলেন, আগস্ট মাস অনেক পাখির প্রজনন মৌসুম। বিশেষ করে মাছের উপর আশ্রয় করে বেঁচে থাকা পাখিরা। প্রজনন মৌসুম আসন্ন হলে বকগুলোর শরীরে গভীর সৌন্দর্য ফুটে ওঠে।

একবার প্রজনন মৌসুমে দেশি-কানিবককে নতুন সাজে দেখে বিস্ময় হয়েছিলাম। ছবি তুলে রেখেছিলাম সঙ্গে সঙ্গে।   হলদে চোখ, তিন- রং চঞ্চু, সাদা কাস্তে-ঝুঁটি, খয়েরি পিঠ, ঘন লাল পা। এছাড়াও প্রজননকালে বড় বগার  বুকেপিঠে পেখমের মতো বাড়তি পালক হয়। বলছিলেন তিনি।

আগস্টে বাসা তৈরির কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, অক্টোবরের দিকে বিল বা হাওরের পানি যাবে কমে। তখন মাছ ধরতে সুবিধে হবে। সুতরাং, মাছের উপর নির্ভরশীল পাখিরা এ সময়েই বাসা বাঁধে। কারণ বাচ্চা ফুটলে খাবারের যাতে কোনো অসুবিধা না হয়।  

বক প্রজাতির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের দেশে মোট পনেরো প্রজাতির বক রয়েছে। এরা সবাই হাওরাঞ্চলে বিশেষ করে বাসা বাঁধতে শুরু করে দিয়েছে। অন্য অঞ্চলে কিন্তু একই পাখিরা আবার অন্য সময় প্রজনন করে। কিন্তু হাওরাঞ্চলে এখন বাসা করছে তারা। কারণ বাসা তৈরি করে ডিম ফুটতে ফুটতে আরো দেড় মাস। তখন পানি কমে আসবে এবং মাছও বেশি বেশি পাওয়া যাবে।

তিনি আরও বলেন, এ সময় বাসা তৈরি করা পাখির প্রজাতির মধ্যে রয়েছে বড় বগা (Great Egret), ছোট বগা (Cattle Egret), চীনা কানিবক (Chinese Pone Haron), দেশি কানিবক (Indian Pone Haron), বিভিন্ন প্রজাতির বগলাসহ (Bittern) অনেক প্রজাতির পানকৌড়ি (Cormorant)।

‘আরেকটি বিশেষ প্রজাতির বক রয়েছে; এটিকে সহজে দেখতে পাওয়া যায় না। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ পাখি। এটি হলো মালয়ী নিশিবক (Malayan Night Heron) যেটা সেটা লুকিয়ে থাকে। তাকে সহজে দেখাই যায় না। লাউয়াছড়াতে আমরা তার বাসা পেয়েছি। সেও এখন বাসা করছে একই সময়ে। ’

নিশিবক সম্পর্কে ইনাম হক বলেন, আমাদের দেশে দু’ প্রজাতির নিশিবক পাওয়া যায়। একটি ‘কালো মাথা নিশিবক’ (Black-crowned Night Heron) যা সারাদেশের পাওয়া যায় এবং অপরটি ‘মালয়ী নিশিবক’ যাকে সহজে দেখা যায় না। মালয়ী নিশিবকটাও এই সময়ই বাসা করছে কিন্তু হাওরাঞ্চলে নয়; গভীর বনে।

নিশিবকগুলো খাবারের সন্ধানে সন্ধ্যার পর এরা বের হয়। ‘ওয়াক’ ‘ওয়াক’ ডেকে রাত্রিবেলা মাছ ধরে খায় বলে জানান এই পাখিবিদ।


বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা আগস্ট ১৫, ২০১৬
বিবিবি/এএ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।