অমর একুশে গ্রন্থমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে এই তিন চরিত্রকেই লাইভ করছে সিসিমপুর।
এখানে হালুম, টুকটুকি আর ইকরি শিশুদের সঙ্গে নানা কথা বলছে।

বই মেলায় শিশু চত্বরের প্রবেশ পথ/ছবি: ইকরাম-উদ দৌলা
মেলা চত্বর ঘুরে দেখা গেছে, শুক্রবারের (০৩ ফেব্রুয়ারি) মতো শনিবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) এতো ভিড় না থাকলেও শিশুচত্বরে উপচেপড়া ভিড়। বেলা ১১টায় মেলার গেট খোলার পরপরই বাবা-মা’রা আসতে শুরু করেন আদরের সন্তানকে নিয়ে। তবে দুপুরের দিকে ব্যাপক সমাগম হয়। শিশুদের বেশিভাগকেই তাদের নিজেদের পছন্দের বই কিনতে দেখা গেছে। প্রচ্ছদ, রঙ, কার্টুন ইত্যাদি বিষয়কেই বই পছন্দের বিষয়বস্তু হিসেবে নিতে দেখা গেছে তাদের। তবে স্টলগুলোর বিক্রয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মেয়ে শিশুরা বেশি নিচ্ছে ঠাকুর মা’র ঝুলি, ইঁদুর ও বাদুড়, সিসিমপুরের বই, বুড়িমা ইত্যাদি। আর ছেলে শিশুরা ক্রিকেট বিষয়ক, সায়েন্স ফিকশন, ধাঁধা বিষয়ক বই বেশি পছন্দ করছে।
শিশুরা নিজেরাই বই পছন্দ করছে/ছবি-ইকরাম-উদ দৌলা
শিশুদের বাবা-মা’র সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, টেলিভিশনে কয়েকদিন ধরেই বই মেলার খবর প্রচারিত হচ্ছে। আর তা দেখে শিশুরাই বলছে, বই মেলায় যাবে। মেলার আসার বিষয়ে ওদের আগ্রহ অনেক।বাবা মঈনুল হক চৌধুরী এবং মা রিফাত মোবাশশেরার সঙ্গে বইমেলায় এসেছে রিসাত মাইনুন চৌধুরী রঙতুলি। শিশুচত্বরের সিসিমপুর চত্বরে দেখা গেল হালুম, টুকটুকি আর ইকরির সঙ্গে খেলছে সে। ওদের কাটা ছড়ায় খিলখিলিয়ে হেসে দৌড়ে আসছে মায়ের কাছে। আবার ছুটে যাচ্ছে। মা রিফাত মোবাশ্শেরার বাংলানিউজকে জানান, রঙতুলি শুক্রবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) রাতেই বলছিল-আমাকে বইমেলায় নিয়ে চল। বইমেলায় যাবো। তাই আজ নিয়ে এলাম।

শিশুচত্বরে খেলতে খেলতে শেখা/ছবি-ইকরাম-উদ দৌলা
শিশুচত্বরের আয়োজনটাও বেশ চমৎকার। আবার বইও পাওয়া যাচ্ছে নানা রকম। এর মধ্য থেকে ধাঁধা, ছড়া, সিসিমপুরের বই নেওয়া হয়েছে। শুধু রঙতুলিই নয়, বাবা-মায়ের সঙ্গে এমন অনেক শিশুই মেলায় এসেছে। মেতেছে সিসিমপুরের লাইভ চরিত্রগুলোর সঙ্গে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন শিক্ষামূলক খেলাতেও উচ্ছ্বাসের সঙ্গে অংশ নিয়েছে তারা। মূলত খেলতে খেলতে শিক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্য নিয়েই এই গেমিং অংশটা মেলায় রাখা হয়েছে বলে বাংলানিউজকে জানান সিসিমপুর লাইভের কো-অর্ডিনেটর অহিদুজ্জামান। তিনি বলেন, এক্কা-দোক্কা, বলতো দেখি ও গ্রোথ চার্ট; এই তিনটি খেলায় শিশুরাও বেশ অংশগ্রহণ করছে।শিশুচত্বর যে বিশেষ একটি উদ্যোগ, তা মেলায় ঢুকলেই আলাদা করে চোখে পড়ে। আর এই চত্বরের মূল আকর্ষণ ওই সিসিমপুর চত্বর। লাইভ শো’র পরেই শিশুরা সুসজ্জিত বটগাছের গোড়ায় তৈরি করা মঞ্চে শিক্ষামূলক খেলায় মাতছে। এ এক দেখার আর উপভোগের বিষয়ও বটে।
শিশুচত্বরে খেলতে খেলতে শেখা/ছবি-ইকরাম-উদ দৌলা
এক্কা-দোক্কায় মূলত সুষম খাবারের তালিকা দেওয়া। শিশুরা ছবি দেখে তা চিহ্নিত করছে। বলতো দেখি-সাজানো হয়েছে খেলতে খেলতে শেখার জন্য। আর গ্রোথ চার্ট একেবারেই ছোট শিশুদের জন্য। যারা সুষম খাবারের নাম জানবে।সিসিমপুর লাইভ শো’র আয়োজন রাখা হয়েছে কেবল শুক্রবার ও শনিবার, এই দুই দিন বেলা সাড়ে ১১, সাড়ে ৩ ও সাড়ে ৬টায়।
বইয়ের প্রতি আগ্রহের বিষয়টি উল্লেখ করে ময়ূরপঙ্খী প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধি চন্দনা মণ্ডল জানান, শিশুরাই তাদের মত করে বই পছন্দ করছে। বাবা-মাও তাই নিচ্ছেন। বিক্রি খুব ভালো। বিভিন্ন কমিক টাইপের বই বেশি চলছে।
লাবণী প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধি আমেনা পারভীন বলেন, মৎসকুমারী, ঠাকুর মার ঝুলি, ম্যাজিক টাইপের বই খুব বিক্রি হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০১৭
ইইউডি/বিএস/জেএম