ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিএনপি

রাজাকারদের তালিকার প্রয়োজনটা কী, প্রশ্ন মির্জা ফখরুলের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৯
রাজাকারদের তালিকার প্রয়োজনটা কী, প্রশ্ন মির্জা ফখরুলের

ঢাকা: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশ স্বাধীনের ৪৮ বছর পর রাজাকারদের তালিকার প্রয়োজনটা কী? এটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বলা হচ্ছে, তালিকা না-কি পাকিস্তানের। পাকিস্তানের তালিকায় তো এদেশের তালিকা হবে না।

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিজয় দিবসের র‍্যালি উদ্বোধনের আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, স্বাধীনতার ৪৮ বছর পরে আজকে আমরা দেখতে পাচ্ছি, এই সরকার অন্যায়ভাবে দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে জোর করে জনগণের সব অধিকার কেড়ে নিয়ে ক্ষমতায় বসে আছে।

আজকে আমরা দেখতে পাই, আমাদের যে ভাই গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে, সে ভাই গুম হয়ে যাচ্ছে। চার-পাঁচ বছর পার হয়ে যায় আমাদের সেই ভাইয়ের সন্তানেরা তাদের পিতার খোঁজ পায় না।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বলে, তারা মুক্তিযুদ্ধের ধারক-বাহক কিন্তু এরাই দেশের সকল গণতন্ত্র হত্যা করেছে। এরা ১৯৭৫ সালে বাকশাল কায়েম করে দেশের গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করেছিল। ৭৫ আওয়ামী লীগের সময় দুর্ভিক্ষ হয়েছিল এবং মানুষ না খেয়ে মারা গিয়েছিল। সেই আওয়ামী লীগ এখন আবার আমাদের ওপর জোর করে ক্ষমতায় চেপে বসেছে। আমাদের লাখ লাখ দেশপ্রেমিক মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে এই দেশকে কারাগারে পরিণত করেছে। তারা আমাদের অধিকারগুলো কেড়ে নিয়ে জোর করে ক্ষমতায় আছে।

আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধকে একটি প্রোডাক্ট হিসেবে ব্যবহার করে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, স্বাধীনতার ৪৮ বছর পরে প্রকৃত রাজাকারদের বাদ দিয়ে তারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তালিকা তৈরি করেছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।

তিনি আরও বলেন, আজকে এই র‍্যালির নেতৃত্ব দেওয়ার কথা ছিল দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার। যিনি শহীদ প্রেসিডেন্ট রহমানের সহধর্মিণী।  যিনি ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে বন্দি ছিলেন। কিন্তু আজকে দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে দেশনেত্রীকে ছাড়াই আমাদের এই র‍্যালিতে অংশ নিতে হচ্ছে।

এসময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার লক্ষ্যে প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান। বলেন, আমরা অবশ্যই আমাদের গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে মুক্ত করে আনবো, ইনশাল্লাহ। আপনারা সব বিভেদ ভুলে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য একটি ইস্পাতকঠিন ঐক্য গড়ে তুলুন এবং এই সরকারের পতন ঘটিয়ে দেশনেত্রীকে মুক্ত করুন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এক সাগর রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের যে মূল চেতনা ছিল, আজকে দুঃখের সহিত বলতে হয়, সেই মূল চেতনা গণতন্ত্র বাংলাদেশে নেই। একটি মিথ্যা মামলায় সরকারের নির্দেশে মাদার অব ডেমোক্রেসি দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে কারাগারে দেওয়া হয়েছে। তিনি জামিন প্রাপ্য হলেও তাকে দেওয়া হচ্ছে না।

স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ৪৮ বছর আগে আমরা যে বিজয় অর্জন করেছিলাম, আজকে আমাদের সেই বিজয়ের আনন্দ ধ্বংস হয়ে গেছে। আমাদের প্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী খালেদা জিয়া আজকে কারাগারে। আমরা আন্দোলন বা আইনের মাধ্যমে তাকে মুক্ত করতে পারিনি। এটি আমাদের ব্যর্থতা। তবে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মুক্ত না হলেও আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা খালেদা জিয়াকে সব ব্যারিকেড ভেঙে জেলের তালা ভেঙে মুক্ত করবই, ইনশাআল্লাহ।

স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, স্বাধীনতার ৪৮ বছর পর আজ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্ত্রী গণতন্ত্রের মা খালেদা জিয়া কারাগারে। আসুন আমরা আজ মরি-বাঁচি (ডু অর ডাই) শপথ নিই, রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করি।

র‍্যালিতে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, মো. শাহজাহান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদিন ফারুক, বিএনপির আব্দুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, আবুল খায়ের ভূঁইয়া প্রমুখ।

বিকেল সোয়া ৩টায় নয়াপল্টন থেকে র‍্যালিটি শুরু হয়ে শান্তিনগর মোড় ঘুরে সোয়া ৪টায় আবার নয়াপল্টনে গিয়ে শেষ হয়। র‍্যালিতে দলের কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নেয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৯
এমএইচ/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।