ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিএনপি

বিশ্ব গণতন্ত্র দিবসে বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই: ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৯
বিশ্ব গণতন্ত্র দিবসে বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই: ফখরুল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

ঢাকা: খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হলে আন্দোলনের মধ্য দিয়েই বের করতে হবে জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আসুন আমরা আমাদের ছোটখাটো যে সমস্যাগুলো আছে- মতানৈক্য আছে, সেগুলোকে পাশে রেখে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার জন্য সবাই একসঙ্গে কাজ করি।

তিনি বলেন, আজকে আমরা যখন বিশ্ব গণতন্ত্র দিবস পালন করছি, তখন বাংলাদেশে কোনো গণতন্ত্র নেই।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর তোপখানা রোডে শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে বিশ্ব গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি একথা বলেন।

ফখরুল বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাংলাদেশে যে গণতান্ত্রিক চেতনা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল, যে দলটি সেই স্বাধীনতাযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিল, তাদের সময়ই প্রথম গণতন্ত্র হত্যা হয়। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র হত্যা করে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তার পরে যিনি গণতন্ত্র নিয়ে এসেছিলেন জিয়াউর রহমান, তাকে কেউ কেউ এখনও সামরিক প্রশাসক বা নেতা হিসেবে অভিহিত করেন। তিনিই কিন্তু এই বহুদলীয় গণতন্ত্রের সুযোগটা সৃষ্টি করে দিয়েছিলেন। আজকে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হয়ে আছে, তাদের পুনর্জন্ম হয়েছিল এই বহুদলীয় গণতন্ত্রের মধ্য দিয়ে’।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে বড় ত্যাগ স্বীকার যদি কেউ করে থাকেন তিনি হলেন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া। কারণ এরশাদ ক্ষমতা দখলের পর থেকে আমাদের নেত্রী যিনি গৃহবধূ ছিলেন, তিনি এই গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘ ৯ বছর সংগ্রাম করেছেন। লড়াই করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে নিয়ে এসেছেন। আজকে প্রায় ১৮ মাস ধরে একটি সাজানো মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। এই সরকার সঙ্গত কারণেই তাকে কারাগারে রেখেছেন কারণ তিনি যদি বাইরে থাকেন তাহলে সরকারের পক্ষে সবকিছু একতরফাভাবে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়’।

ফখরুল বলেন, ‘আজকে শুধু বাংলাদেশে নয়, সামগ্রিকভাবে গোটা বিশ্বে যে রাজনৈতিক পরিবর্তন এসেছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ পড়ে গেছে। এই পড়ে যাওয়ার পেছনে বিভিন্ন কারণ আছে। সেসব আলোচনার মধ্যে যেতে চাই না। আমি বলতে চাই আজকে সরকার পুরোপুরিভাবে ওই আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগসাজশ করে বাংলাদেশের জনগণের অধিকার হরণ করে নিচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে তারা সম্পূর্ণভাবে একটা পাপেট গভর্নমেন্টে পরিণত হয়েছে’।  

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বক্তব্যের সূত্র ধরে মির্জা ফখরুল বলেন,  ‘ঐক্যফ্রন্টকে তিনি এখন আর একটিভ দেখতে পাচ্ছেন না। এটা সত্য কথা বলেছেন। কিন্তু একটিভটা কোন দিক দিয়ে না, আমরা আমাদের কাজগুলো করছি। দলগুলোকে সংগঠিত করছি। আমরা সংগঠনগুলোকে সংগঠিত করে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে নেমে আসতে পারি, সেজন্য কাজ করছি। আমি জানি অন্যান্য দলগুলো প্রত্যেকেই কাজ করছে। এই কাজের মধ্য দিয়ে অবশ্যই জনগণের চাহিদার কারণেই অতিদ্রুত এই ঐক্য তৈরি হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। আজকে সব রাজনৈতিক দলগুলো যদি একত্রিত না হয় তাহলে সে লড়াইয়ে সফল হওয়া যাবে না। সেকারণেই নির্বাচনের আগে আমরা ঐক্যফ্রন্ট ও জোট তৈরি করেছিলাম। সেগুলো অটুট আছে। কোনো ভাঙন ধরেনি’।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে জেএসডি সভাপতি আসম আব্দুর রব, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ঢাবির আইন বিভাগের শিক্ষক ড. আসিফ নজরুল, জনসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, নাগরিক ঐক্য’র উপদেষ্টা এসএম আকরাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৯
এমএইচ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।