ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ব্যাংকিং

দাবিদারহীন অর্থ জমা হবে বাংলাদেশ ব্যাংকে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৮
দাবিদারহীন অর্থ জমা হবে বাংলাদেশ ব্যাংকে

ঢাকা: দেশে কার্যরত কোনো ব্যাংকের শাখায় ১০ বছর পর্যন্ত লেনদেন না হওয়া অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা হবে। তার আগে পাওনাদারের পক্ষে কোন ব্যক্তি ও আমানতকারীকে একটি নোটিশ দিতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমানতকারী বা তার পক্ষ থেকে কোন জবাব না আসে বা যোগাযোগ না করে তা হলে সেই অর্থ ও মূল্যবান সম্পদ বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা হওয়ার দুই বছরের মধ্যে দাবিদার পাওয়া গেলে উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ দিয়ে অর্থ-সম্পদ সংগ্রহ করা যাবে। এই সময়ের মধ্যে কোনো দাবিদার না পেলে তা সরকারি অর্থ ও সম্পদ হিসেবে গণ্য করা হবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি নীতিমালা জারি করেছে। ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ ধারা ৩৫ উপধারা-১ মোতাবেক গ্রাহক কর্তৃক ১০ বছর পর্যন্ত লেনদেন বা যোগাযোগ করা না হলে সেসব অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী দাবিদারহীন অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী হিসেবে গণ্য করা হবে।

গণনাকৃত অর্থ ও চেক, ড্রাফট বা বিনিময় দলিলের পাওনাদারদের পক্ষে কোনো ব্যক্তিকে এবং মূল্যবান সামগ্রীর আমানতকারীকে তার দেয়া বা প্রেরিত সর্বশেষ ঠিকানায় প্রেরিত ব্যাংক-কোম্পানির প্রাপ্তি স্বীকারসহ রেজিস্ট্রিকৃত ডাকযোগে ৩ মাসের লিখিত নোটিশ পাঠাতে হবে। ড্রাফট বা বিনিময় দলিলে পাওনাদারের ঠিকানা পাওয়া না গেলে আবেদনকারীর ঠিকানায় অনুরূপ নোটিশ দিতে হবে।

১০ বছর অতিবাহিত হওয়ার পর যেসব দাবিদারহীন অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী অপরিশোধিত, বা ক্ষেত্রমতে অফেরত অবস্থায় ব্যাংকের কাছে থাকে সেসব অর্থ বা সামগ্রীর একটি বিবরণী ব্যাংক কর্তৃক প্রত্যেক পঞ্জিকা বছর শেষ হওয়ার পরবর্তী ত্রিশ দিনের মধ্যে নির্ধারিত ফরমে বাংলাদেশ ব্যাংকে তালিকা পাঠাতে হবে। নোটিশ পাঠানোর ৩ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরেও যদি তার প্রাপ্তি স্বীকার পত্র বা কোন উত্তর না আসে, তা হলে ওক্ত আইনের উপধারা ২ এর বর্ণনানুযায়ী দাবিদারহীন আমানত ও মূল্যবান সামগ্রী প্রতি পঞ্জিকা বছরের এপ্রিল মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দিতে হবে।  
দাবিদারহীন আমানত ও মূল্যবান সামগ্রী বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংকে হস্তান্তরিত দাবিদারহীন আমানত ও মূল্যবান সামগ্রীর তালিকা সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃক তাদের ওয়েবসাইটে এবং সরকারি গেজেট ও অন্যূন দুটি পত্রিকায় প্রতি তিন মাসে একবার করে এক বছর প্রকাশ করতে হবে।

ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ধারা-৩৫ এর (৯) অনুযায়ী দাবিদারহীন আমানত ও মূল্যবান সামগ্রীর তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে এক বছর ধরে প্রদর্শনের লক্ষ্যে ব্যাংকগুলোকে ওই বিবরণীর সফটকপি বাংলাদেশ ব্যাংকে নিয়মিত সরবরাহ করতে হবে।

দাবিদারহীন আমানতের অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক গৃহীত হওয়ার পর হতে দুইবছরের মধ্যে কোন দাবি উত্থাপিত হলে তা ফেরৎ দিতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃক গ্রাহকের আবেদনপত্রে প্রয়োজনীয় কাগজাদিসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ঢাকার ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ বরাবর আবেদন করতে হবে।

দাবিদারহীন আমানতের অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক গৃহীত হওয়ার পর থেকে দুই বছরের মধ্যে গ্রাহক কর্তৃক উত্থাপিত দাবি মেটানোর পর অবশিষ্ট অর্থ বা সামগ্রী সম্পর্কে যদি আর কোন দাবি উত্থাপন না করা হয় বা কোন পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করা না হয় তাহলে দুই বছর সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর থেকে সে অর্থ বা মূল্যবান সামগ্রীর ওপর কারো কোন দাবি থাকবে না এবং তা সরকারের সম্পত্তি হিসেবে গণ্য হবে এবং সরকারের কাছে তা ন্যস্ত করা হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে পড়ে থাকা এ ধরনের অর্থ সরকারি কোষাগারে জমাদানের আগে জমাকারী বা তার যোগ্য নমিনির কাছে তুলে দিতে এ বিষয়ে একটি নীতিমালা করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৮
এসই/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।