ঢাকা, মঙ্গলবার, ৪ চৈত্র ১৪৩১, ১৮ মার্চ ২০২৫, ১৭ রমজান ১৪৪৬

বাংলানিউজ স্পেশাল

শুক্রবার রাতেই সাগরপথে মালয়েশিয়া যাচ্ছে ১২শ’জন

বাংলানিউজ ইনভেস্টিগেটিভ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১২
শুক্রবার রাতেই সাগরপথে মালয়েশিয়া যাচ্ছে ১২শ’জন

সেন্টমার্টিন: মালয়েশিয়ার পথে গভীর সাগরে দুইদিন ধরে চার’শ জন অপেক্ষা করছেন। শুক্রবার রাতে তাদের সঙ্গে যোগ হবে আরো ছয় থেকে আট’শ জন।

এর মধ্যে ৫০ জন উঠবেন টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের দুটি ঘাট থেকে।

সূত্র জানিয়েছে, গভীর সমুদ্রে অপেক্ষারতদের চার’শ জনই মায়ানমার থেকে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা। তবে রাতে যারা যোগ দিচ্ছেন তারা সবাই বাংলাদেশি নাগরিক। এরা অপেক্ষা করছেন শাহপরীর দ্বীপ, সাবরাং, কুতুব পালং, বদর মোকাম, বাহারছড়া, ডেলপাড়া, নোয়াপাড়া, জালিয়াপাড়া, মুন্ডাডিল, খুড়েরমুখ, জমাদারের কাঠি, মুশকিলেরপাড়া ঘাট সংলগ্ন এলাকাগুলোতে। সবাই এখন রয়েছেন দালালদের আশ্রয়ে। রাতেই তাদের জাহাজে তোলা হবে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, গত বুধবার টেকনাফ বন্দরে আমদানি করা কাঠ নামিয়ে ছেড়ে গেছে মায়ানমারের তিনটি বড় কাঠের তৈরি জাহাজ। যা বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করে অপেক্ষা করছে মায়ানমার সমুদ্রসীমার কাছাকাছি ও সেন্টমার্টিন দ্বীপের পশ্চিম-দক্ষিণের গভীর সমুদ্রে। শুক্রবার দিবাগত রাতে এই জাহাজে তুলে দেওয়া হবে বাংলাদেশিদের।

মুন্ডারডিলের আক্তার ফারুখ মার্ডার কেসের আসামি আব্দুর রহমান, পিতা হাজী আবুল কাসেম, স্থানীয় সংসদ সদস্যের বৈবাহিক সম্পর্কিত ভাই এবং সাবেক ইউপি মেম্বার ইউনুস, এমপির ভাগিনা ও সাবরাংয়ের আব্দুর রহমান দারোগার ছেলে নিপু, মুন্ডারলিরের আইয়ুব খান ও জাহাজের তেল বিক্রেতা জয়নালসহ একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট রোহিঙ্গাসহ এই বিপুল সংখ্যক লোক সংগ্রহ করে তাদের মালয়েশিয়া পাঠানোর ব্যবস্থা নিয়েছে।

শুক্রবার রাতে খুড়ের মুখ ঘাট থেকে ৩০ জন, মুন্ডারিল থেকে ২০ জন ও জয়নালের ঘাট থেকে ১৫জন বাংলাদেশী মাছধরার ছোট ট্রলারে করে গভীর সমুদ্রে সেন্টমার্টিন উপকূলে অপেক্ষারত বার্মিজ জাহাজে ওঠার কথা রয়েছে। জাহাজে অপেক্ষারত একজন মোবাইল ফোনে বাংলানিউজকে জানান, চার’শ রোহিঙ্গা মালেয়শিয়া যাওয়ার জন্য অপেক্ষায় আছে। শুক্রবার রাতে আরো ছয় থেকে আট’শ বাংলাদেশি যুবক জাহাজে উঠলে তা প্রথমে থাইল্যান্ডের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবে।

malyasia

malyasia

মানবপাচার দালাল জয়নালের ভাষ্যে, “আমরা মোট ১২০০ যুবক এই ট্রিপে পাঠানোর আশা করছি। তবে রাতের মধ্যে হাজার খানেক যাত্রী উঠলেই জাহাজ ছেড়ে দেবো। ”

এদিকে অন্য এক দালাল বলেন, “আব্দুর রহিম গংদের চট্টগ্রামের পটিয়ার শিকলবাহা, মিরসরাই, বাঁশখালীতে লোক সংগ্রহের স্টেশন আছে। সেখানে সংগৃহীত যুবকেরা অপেক্ষায় আছে। আজ তারা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে সেন্টমার্টিনে অবস্থানরত জাহাজে উঠবে। এক্ষেত্রে তাদের বহনকারী ট্রলার চট্টগ্রাম থেকে গভীর সমুদ্র দিয়ে সেন্টমার্টিনের পশ্চিম উপকূলে পৌঁছুবে। ”

আট দিনে থাইল্যান্ড পর্যন্ত পৌঁছে দিতে দালালরা আদায় করেছে ১০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। সেখানে অপেক্ষারত থাই দালাল নেবে আরো এক লাখ ১৫ হাজার থেকে এক লাখ ৩৫ হাজার টাকা।

সব ঠিক থাকলে সর্বোচ্চ ১৫ দিনে মালয়েশিয়া পৌছে যাবে বিপদপথের এই যাত্রীরা। নয়ত ঘটবে সাগরেই সলিল সমাধি।

অঘটন ঘটলে তার দায় আমাদের নেই এমনই কথা রয়েছে বিদেশ গমনেচ্ছুদের সঙ্গে, জানালেন দালালদের একজন।

বাংলাদেশ সময়:১৮০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর, ২১, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।