ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

চরে খিরার ফলন বেড়েছে, লাভের আশা কৃষকদের

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০২৪
চরে খিরার ফলন বেড়েছে, লাভের আশা কৃষকদের

চাঁদপুর: চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার চরাঞ্চলে গত বছরের তুলনায় এ বছর খিরার ফলন ভালো হয়েছে। গত বছর প্রতি হেক্টর জমিতে ১০ থেকে ১২ টন খিরা উৎপাদন হলেও এ বছর ১৫ থেকে ২০ টন উৎপাদনের সম্ভাবনা জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।

আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় খিরার ফলন ভালো হয়েছে। এর ফলে খিরা বিক্রি করে লাভের আশা করছেন কৃষকরা।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, উপজেলায় ষাটনল, এখলাসপুর, মোহনপুর, ফরাজীকান্দি, সুলতানাবাদ এবং জহিরাবাদ ইউনিয়নের মেঘনা ও ধনাগোদা নদীর তীরের চরাঞ্চলের কৃষকরা বেশিরভাগ খিরা আবাদ করেন। এ বছর প্রায় ৬০ হেক্টর জমিতে খিরা আবাদ করা হয়েছে।

চরাঞ্চলের কৃষকরা জানিয়েছেন, কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় গত বছর থেকে এ বছরে খিরা চাষ বেড়েছে এ অঞ্চলে। খিরা চাষ করে অনেক কৃষকই এখন স্বাবলম্বী হয়েছে। খিরাগাছের পরিচর্যা ও খিরা সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।

বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখাগেল, মাঠজুড়ে সবুজ মখমলের মতো বিছিয়ে রয়েছে খিরার গাছ। সবুজ পাতার মাঝে হলুদ ফুলে ভ্রমর মৌমাছিরা ওড়ছে। আর খিরার ডগায় ডগায় রয়েছে সবুজ কচকচে খিরা।

উপজেলার ষাটনল গ্রামের কৃষক জামাল ও মনির হোসেন, তবদিল হোসেন জানান, অন্য ফসলের চেয়ে খিরা চাষে অধিক লাভ হওয়ায় খিরা চাষের প্রতি তাদের আগ্রহ বেড়েছে।

তারা আরো জানান, এক বিঘা জমিতে খিরা চাষ করতে প্রায় ২৫ হাজার খরচ হয়। আর বাজারজাত ও শ্রমিকসহ আরও ৫ হাজার টাকা খরচ হয়। সব মিলিয়ে ৩০ হাজার টাকার মতো প্রতি বিঘায় খিরা চাষ করতে খরচ হয়। এরপর এসব খিরা বিক্রি করে ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা পাওয়া যায়। এ বছর আমাদের প্রতি বিঘাতে ৫০-৭০ হাজার টাকা মতো লাভ থাকবে।

এদিকে উপজেলার চরাঞ্চলের চারদিকে তাকালে শুধু খিরা আর খিরা ক্ষেত দেখা যায়। নারী-পুরুষ ও শিশু খিরা জমিতে কাজে ব্যস্ত। কেউবা খিরা তুলছে আবার কেউবা বাছাই করছে বিক্রির জন্য বস্তা প্রস্তুত করছে।

খিরা তুলতে আসা এখলাছপুর এলাকার কৃষক শাহিন মিয়া, কবির ও মাসুম মিয়া জানান, খিরা চাষে খরচ কম অধিক লাভ। এ বছর যে কয়েকবার বিক্রি করেছি তাতে ভালো দাম পেয়েছি। আগামীতে আরও বেশি জমিতে চাষ করার ইচ্ছে আছে।

মুন্সিগঞ্জ থেকে খিরা কিনতে আসা পাইকার মোজাফফর ও গোলাম রাব্বানী বলেন, এ বছর ১ হাজার ৪শ টাকা মণ প্রতি খিরার দাম ধরা হয়েছে। ঢাকা যাত্রাবাড়ী যাতায়াত ভাড়া ও অন্যান্য খরচসহ প্রতি মণ ১ হাজার ৫শ টাকা খরচ পড়বে। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ৪০ টাকা ধরে বিক্রি করছি। কেজি ৫ টাকা ও মণ প্রতি ২শ টাকা লাভ হচ্ছে। এ বছর দাম ভালো হওয়ায় খুচরা বিক্রি বেশি।

মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফয়সাল মোহাম্মদ আলী বাংলানিউজ বলেন, এবার মতলব উত্তর উপজেলায় ৬০ হেক্টর জমিতে খিরা চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ১৫ থেকে ২০ টন করে খিরা উৎপাদন হচ্ছে।

গত বছরের চেয়ে ফলন ও দাম বেশি হওয়ায় কৃষকদের লাভ হচ্ছে। স্থানীয় চাষিদের মধ্যে খিরা চাষের আগ্রহ বাড়ছে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০২৪
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।