ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

শিবচরে সবুজ মাঠে হলুদের হাসি

ইমতিয়াজ আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২২
শিবচরে সবুজ মাঠে হলুদের হাসি

মাদারীপুর: মাদারীপুর জেলার পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদী বিধৌত চরাঞ্চলসহ ফসলের মাঠে এখন হলুদের সমারোহ। সরিষার ফলন ভালো হওয়ায় মাঠজুড়ে চোখ জুড়ানো সৌন্দর্য ফুটে আছে।

 

কৃষকরা জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সরিষা ক্ষেতে ভালো ফুল এসেছে। আশা করা যাচ্ছে ফলনও বেশ ভালো হবে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বহেরাতলা, শিরুয়াইল, কুতুবপুর, নিলখী, দত্তপাড়া, বাঁশকান্দিসহ পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদের তীরবর্তী চর এলাকার বিস্তীর্ণ ক্ষেতজুড়ে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেতে ইতোমধ্যেই এসেছে ফুল। যেন হলুদের চাদর বিছানো ক্ষেতজুড়ে।  

উপজেলার বহেরাতলা এলাকার কৃষক মো. রাকিবুল হাসান বলেন, শীত মৌসুমে এই এলাকায় সরিষা, কলাই, পেঁয়াজ, রসুনের আবাদ বেশি হয়। সরিষা আবাদে বেশ ভালো ফলন হওয়ায় প্রতি বছরই কৃষকেরা অধিক পরিমাণে সরিষার আবাদ করে।

দত্তপাড়া এলাকার কৃষক মো. ফারুক বলেন, সরিষা চাষ এখানে নিয়মিত করা হয়। প্রতি বছর মৌসুমী ফসল হিসেবে সরিষা চাষাবাদ করি। সরিষা ক্ষেতে কালাই চাষও করা হয় একত্রে।

তিনি আরও বলেন, সরিষা চাষাবাদে তুলনামূলক খরচ ও পরিশ্রম কম। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সরিষার ভালো ফলন আসে।

বহেরাতলা এলাকার আরেক কৃষক মো. হারুন জানান, সরিষা চাষে বিঘা প্রতি আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা খরচ হয়। সরিষা ঘরে তোলা পর্যন্ত প্রায় চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা ব্যয় হয়। এ বছর ২২ কাঠা সরিষা লাগিয়েছি। গত বছর ভালো দাম পাওয়া গেছে। আশা করছি এ বছরও ভালো দাম পাওয়া যাবে।

শিবচর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানা গেছে, উপজেলায় মৌসুমী ফসলের মধ্যে প্রতি বছরই সরিষার আবাদ হয়। শীত মৌসুমে উপজেলার বিস্তৃর্ণ মাঠ জুড়ে হলুদ ফুলের ছড়াছড়ি থাকে। চলতি বছর উপজেলায় ৪ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। গত বছর যেখানে আবাদ হয়েছিল ৩ হাজার ৭৯৪ হেক্টর। ফলন ভালো হওয়ায় এ উপজেলার কৃষকেরা সরিষা চাষের দিকে বেশ আগ্রহী। উপজেলায় শীত মৌসুমের ফসলের মধ্যে গত দুই বছর ধরে সূর্যমুখীর চাষ হচ্ছে। এ বছর ২০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে। ফলন গত বছরের তুলনায় বেড়েছে চলতি বছর। এছাড়া সয়াবিন ও ফেলন (ডাল জাতীয় শস্য) চাষ শুরু হয়েছে এ বছর। পরীক্ষামূলকভাবে এ দুটি শীতকালীন ফসলের চাষ শুরু করেছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। এছাড়া অন্যান্য ফসলের মধ্যে পেঁয়াজ, রসুন, কালোজিরা, খেসারী, ধনিয়া, মশুর, গম ও ভূট্টার আবাদ গত বছরের তুলনায় বেড়েছে চলতি বছর।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর বেশি সরিষার আবাদ হয়েছে। বাজারে সরিষার ভালো দাম পাওয়া রয়েছে। নতুন উন্নত জাতের উদ্ভাবনের ফলে ফলন বৃদ্ধি এবং পতিত জমিতে মধ্যবর্তী ফসল হিসেবে সরিষা চাষের মাধ্যমে লাভজনক হওয়ার কারণে কৃষকরা সরিষা চাষে আগ্রহী।

বাংলাদেশ সময়: ১১১০  ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২২
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।