ঢাকা, সোমবার, ১৩ মাঘ ১৪৩১, ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২৬ রজব ১৪৪৬

অন্যান্য

রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা না কাটলে অর্থনীতিতে নিশ্চয়তা ফিরবে না

ড. জাহিদ হোসেন | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২৫
রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা না কাটলে অর্থনীতিতে নিশ্চয়তা ফিরবে না ড. জাহিদ হোসেন

রেমিট্যান্সে একটা চাঙ্গাভাব আছে। রপ্তানি আয়ে ৮ শতাংশের মতো প্রবৃদ্ধি আছে।

রিজার্ভও স্থিতিশীল রয়েছে। তবে সার্বিকভাবে অর্থনীতি দুর্বল, এতে কোনো সন্দেহ নেই।

বিশেষ করে বিনিয়োগ পরিস্থিতি। অর্থনীতির গতি ফেরানোর জন্য সবচেয়ে বড় বাধা অনিশ্চয়তা। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক—এই দু্ই ধরনের অনিশ্চয়তা আছে।

বর্তমানে দেশে একটি রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা আছে।

রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা না কাটলে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা কাটবে না। তবে একেবারে রাতারাতি শতভাগ স্থিতিশীলতা চলেও আসবে না। এর মধ্যেই সরকারকে অর্থনৈতিক পদক্ষেপগুলো নিতে হবে। বড় বড় জায়গায় যে বিষফোড়াগুলো আছে তা দূর করতে হবে।

ব্যাংকিং খাতের, জ্বালানি খাতের, আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থার নিয়ম-কানুন, এনবিআরের সংস্কার, বিডার উদ্যোগ ফলপ্রসূ হবে কবে—এ বিষয়গুলো দেখতে হবে।

রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকার পরও যদি অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে হয় তাহলে আগামী বাজেটে একটা সুনির্দিষ্ট অর্থনৈতিক কর্মসূচি থাকতে হবে। করনীতি কী হবে, ব্যয়ের ক্ষেত্রে অতীতে যেসব অপচয় হয়েছে, অদক্ষতা দেখা গেছে, সেগুলো শোধরাতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে—এ বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখতে হবে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য বাজেটে কী থাকবে—বাজেটে কিছুটা হলেও এমন পদক্ষেপ থাকা দরকার।

আর্থিক ও জ্বালানি খাতের কাঠামোগত সংস্কারের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিতে হবে।

বছরের শেষের দিকে ব্যাংক খাতের দুর্বল প্রতিষ্ঠানগুলোকে একটা নিষ্পত্তির দিকে নিয়ে যাওয়া, গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানোর জন্য বছরের শেষ পর্যন্ত কোন কাজগুলো করা হবে—এ জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে তাদের সমর্থন আদায় করতে হবে।

যে অর্থনৈতিক কর্মসূচি নেওয়া হবে তাতে যেন রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থন থাকে। তাহলে বিনিয়োগকারীরা ভরসা পাবে যে সরকার পরিবর্তন হলেও অর্থনৈতিক কর্মসূচিগুলো বদলাবে না। সে ক্ষেত্রে বিনিয়োগ ঘুরে দাঁড়ানোর একটা পরিস্থিতি তৈরি হবে। এতে নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে, তা নয়। রাজনৈতিক দলগুলোর যদি সংস্কার ও অন্যান্য কর্মসূচিতে প্রতিশ্রুতি থাকে তাহলেই দেশে বিনিয়োগ বাড়বে। বিনিয়োগকারীরা গ্রীষ্মকালে বিদ্যুৎ থাকবে কি না, গ্যাসের সংকট কিভাবে কাটবে—এ বিষয়ে নিশ্চয়তা চায়।

সবাই চায় আর্থিক খাতে সংস্কার হোক। ইসলামী ব্যাংক যেগুলো দুর্বল আছে তার নিষ্পত্তি হোক। খেলাপি ঋণ আদায়ের কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থন থাকলে পরেও এসব চালু থাকবে। বিনিয়োগকারীরা এখন পরিস্থিতি বোঝার জন্য অপেক্ষা করছে। তারা যদি ইতিবাচক লক্ষণ দেখে তাহলে বিনিয়োগ বাড়বে। বিনিয়োগ বাড়লে অর্থনীতিতে আবার চাঞ্চল্য ফিরে আসবে।

লেখক: সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ, বিশ্বব্যাংক

সূত্র: কালের কণ্ঠ

বাংলাদেশ সময়: ০৮২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।